ঢাকা ০৯:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাবুগঞ্জে প্রতারক সৌরভের মা এবার ফেঁসে গেলেন চেক মামলায়।

বাবুগঞ্জে প্রতারক সৌরভের মা এবার ফেঁসে গেলেন চেক মামলায়।

আসামীকে খুঁজছে পুলিশ পলাতক মলিনা রানী দাস

বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি :- ধারের টাকা পরিষদের পরিপ্রেক্ষিতে চেক দিয়ে ফেঁসে গেলেন বরিশাল বাবুগঞ্জের রহমতপুর দাসপাড়ার কিশোর কুমারের স্ত্রী মলিনা রানী দাস। যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারপতি জাহিদুল আজাদ তার বিচারাধীন এজলাসে টাকা আদায় এবং ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দণ্ডিত করার রায় ঘোষণা করেন।

একই এলাকার রহমতপুর বাজারের ব্যবসায়ী কাওসার মাহমুদ ২২ সালের ৩০ এ নভেম্বর ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার চেক প্রতারণার একটি মামলা করেছিলেন মলিনা রানীর বিরুদ্ধে।  বাদির পক্ষে আইনজীবী সরোয়ার হোসেন ও এ পি পি নুরুল হক মোল্লা এবং আসামীর পক্ষে বিপ্লব কুমার রায় মামলাটি পরিচালনা করেন । মামলাটি দীর্ঘ দুই বছর ৫ মাস পরে বিজ্ঞ বিচারপতি রায় ঘোষনা করেন।

মামলার রায় ও এজাহার সূত্রে পাওয়া যায়, মামলার আসামী মলিনা রানী দাস পাওনা টাকা পরিশোধ করার প্রেক্ষিতে ২২ সালের ২০ নভেম্বর তার নিজ নামের পরিচালিত রূপালী ব্যাংক লিঃ রহমতপুর- বরিশাল শাখার সঞ্চয় হিসাব নং ১৬৫২৭ এর তেরো লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার একটি চেক কাওসারকে প্রদান করেন। চেক নম্বর SBLT 9195885 । ২২ সালের ২৮ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে কাওসার মাহমুদ চেকটি জমা দিলে অপরপ্ত তহবিল মন্তব্যে ডিজওনার হয়। এক মাসের সময় সীমা দিয়ে ডাকের মাধ্যমে আসামীর কাছে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। আসামী লিগ্যাল নোটিশ সম্পর্কে অবগতি হওয়ার পরেও টাকা পরিশোধ না করায় ২৩ সালের ১০ জানুয়ারি বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে ১৮৮১ সালের এনআই একটের ১৩৮ ধারায় একটি মামলা করেন। মামলা সেসন নং ৪৮৬ /২৩ ।

পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত নিষ্পত্তির জন্য যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা বদলি করেন । দীর্ঘ ২ বছর ৫ মাস পরে মামলাটি সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে পর্যালোচনা করে ১৮৮১ সালের ১৩৮ ধারার বর্ণিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে আসামি মলিনা রানীর বিরুদ্ধে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দণ্ডিত করেন ও চেকে উল্লেখিত ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আরব করেন এবং গ্রেপ্তারী পরোনা জারি করেন।

মামলার বাদি কাওসার জানান, স্কুল লাইফের জুনিয়ার বন্ধু সৌরব দাসের সাথে সুসম্পর্ক থাকার কারনে সৌরভ ও তার মাকে বিভিন্ন সময়ে টাকা ধার দিতেন এবং সময়মতো মতো টাকা ফেরত পেতেন। ২২ সালে ১৩ লক্ষ ৫০ হাজর টাকা ধার নিয়ে নগদ অর্থ পরিষদের পরিবর্তে মলিনা রানী চেক প্রদান করেন। উক্ত এমাউন্ট ওই একাউন্টে না থাকার কারণে চেকটি অপরপ্ত তহবিল মর্মে ডিজওনার হয়ে যায়। পরবর্তীতে টাকা না দিয়ে তাল বাহানা করার কারণে আদালতে কাওসার একটি মামলা দায়ের করেন। ওই সময় সৌরভের কাছে আমার পাওনা ১১ লক্ষ টাকা এবং বাজারে বিভিন্ন ব্যবসায়ির একত্রে ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে সৌরভ পালিয়ে যায়।

এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জানান,
ওয়ারেন্ট হাতে পেলে অবশ্যই গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

এ বিষয়ে রহমতপুর বাজারের মোবাইল ব্যাংকিং ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মিল্টন কাজী জানান, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের ডিএসও সৌরভ রহমতপুর বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ির কাছ থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়, তার মধ্যে আমারো এক লক্ষ ৭৯ হাজার কারা রয়েছে, আমি ছাড়া আরো অন্য ব্যবসায়ী কাওসারের কাজ থেকে ১১ লক্ষ টাকা, এয়ারপোর্টের মোড়ের আজিজুল হকের কাজথেকে ৫০ হাজার, খানপুরা রুম্মানের কাজ থেকে একলক্ষ টাকা, লিটনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা ও রহমতপুর ব্যবসায়ী আলাউদ্দিনের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা সহ আরো অন্যান্য লোকের কাছ থেকে মোট ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানায় তৎকালিন একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। এস আই সাইফুল ঘটনা তদন্ত করেন। এমন কি আমরা নগদ অফিসে এবং স্থানীয়ভাবে বসেও কোন সমাধান পাইনি। আমরা এ প্রতারক পরিবারের বিচার দাবি করি।

এবিষয়ে মলিনা রানীর দাস এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার বাসা তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।

Tag :
About Author Information

Barta Times bd

জনপ্রিয়

নলছিটিতে সেই পরকীয়া প্রেমিক প্রেমিকা অবশেষে পুলিশের খাঁচায়

বাবুগঞ্জে প্রতারক সৌরভের মা এবার ফেঁসে গেলেন চেক মামলায়।

আপডেট সময় : ০২:৫৩:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

বাবুগঞ্জে প্রতারক সৌরভের মা এবার ফেঁসে গেলেন চেক মামলায়।

আসামীকে খুঁজছে পুলিশ পলাতক মলিনা রানী দাস

বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি :- ধারের টাকা পরিষদের পরিপ্রেক্ষিতে চেক দিয়ে ফেঁসে গেলেন বরিশাল বাবুগঞ্জের রহমতপুর দাসপাড়ার কিশোর কুমারের স্ত্রী মলিনা রানী দাস। যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারপতি জাহিদুল আজাদ তার বিচারাধীন এজলাসে টাকা আদায় এবং ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দণ্ডিত করার রায় ঘোষণা করেন।

একই এলাকার রহমতপুর বাজারের ব্যবসায়ী কাওসার মাহমুদ ২২ সালের ৩০ এ নভেম্বর ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার চেক প্রতারণার একটি মামলা করেছিলেন মলিনা রানীর বিরুদ্ধে।  বাদির পক্ষে আইনজীবী সরোয়ার হোসেন ও এ পি পি নুরুল হক মোল্লা এবং আসামীর পক্ষে বিপ্লব কুমার রায় মামলাটি পরিচালনা করেন । মামলাটি দীর্ঘ দুই বছর ৫ মাস পরে বিজ্ঞ বিচারপতি রায় ঘোষনা করেন।

মামলার রায় ও এজাহার সূত্রে পাওয়া যায়, মামলার আসামী মলিনা রানী দাস পাওনা টাকা পরিশোধ করার প্রেক্ষিতে ২২ সালের ২০ নভেম্বর তার নিজ নামের পরিচালিত রূপালী ব্যাংক লিঃ রহমতপুর- বরিশাল শাখার সঞ্চয় হিসাব নং ১৬৫২৭ এর তেরো লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার একটি চেক কাওসারকে প্রদান করেন। চেক নম্বর SBLT 9195885 । ২২ সালের ২৮ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে কাওসার মাহমুদ চেকটি জমা দিলে অপরপ্ত তহবিল মন্তব্যে ডিজওনার হয়। এক মাসের সময় সীমা দিয়ে ডাকের মাধ্যমে আসামীর কাছে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। আসামী লিগ্যাল নোটিশ সম্পর্কে অবগতি হওয়ার পরেও টাকা পরিশোধ না করায় ২৩ সালের ১০ জানুয়ারি বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে ১৮৮১ সালের এনআই একটের ১৩৮ ধারায় একটি মামলা করেন। মামলা সেসন নং ৪৮৬ /২৩ ।

পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত নিষ্পত্তির জন্য যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা বদলি করেন । দীর্ঘ ২ বছর ৫ মাস পরে মামলাটি সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে পর্যালোচনা করে ১৮৮১ সালের ১৩৮ ধারার বর্ণিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে আসামি মলিনা রানীর বিরুদ্ধে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দণ্ডিত করেন ও চেকে উল্লেখিত ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আরব করেন এবং গ্রেপ্তারী পরোনা জারি করেন।

মামলার বাদি কাওসার জানান, স্কুল লাইফের জুনিয়ার বন্ধু সৌরব দাসের সাথে সুসম্পর্ক থাকার কারনে সৌরভ ও তার মাকে বিভিন্ন সময়ে টাকা ধার দিতেন এবং সময়মতো মতো টাকা ফেরত পেতেন। ২২ সালে ১৩ লক্ষ ৫০ হাজর টাকা ধার নিয়ে নগদ অর্থ পরিষদের পরিবর্তে মলিনা রানী চেক প্রদান করেন। উক্ত এমাউন্ট ওই একাউন্টে না থাকার কারণে চেকটি অপরপ্ত তহবিল মর্মে ডিজওনার হয়ে যায়। পরবর্তীতে টাকা না দিয়ে তাল বাহানা করার কারণে আদালতে কাওসার একটি মামলা দায়ের করেন। ওই সময় সৌরভের কাছে আমার পাওনা ১১ লক্ষ টাকা এবং বাজারে বিভিন্ন ব্যবসায়ির একত্রে ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে সৌরভ পালিয়ে যায়।

এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জানান,
ওয়ারেন্ট হাতে পেলে অবশ্যই গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

এ বিষয়ে রহমতপুর বাজারের মোবাইল ব্যাংকিং ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মিল্টন কাজী জানান, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের ডিএসও সৌরভ রহমতপুর বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ির কাছ থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়, তার মধ্যে আমারো এক লক্ষ ৭৯ হাজার কারা রয়েছে, আমি ছাড়া আরো অন্য ব্যবসায়ী কাওসারের কাজ থেকে ১১ লক্ষ টাকা, এয়ারপোর্টের মোড়ের আজিজুল হকের কাজথেকে ৫০ হাজার, খানপুরা রুম্মানের কাজ থেকে একলক্ষ টাকা, লিটনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা ও রহমতপুর ব্যবসায়ী আলাউদ্দিনের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা সহ আরো অন্যান্য লোকের কাছ থেকে মোট ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানায় তৎকালিন একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। এস আই সাইফুল ঘটনা তদন্ত করেন। এমন কি আমরা নগদ অফিসে এবং স্থানীয়ভাবে বসেও কোন সমাধান পাইনি। আমরা এ প্রতারক পরিবারের বিচার দাবি করি।

এবিষয়ে মলিনা রানীর দাস এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার বাসা তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।