ঢাকা ০১:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরিশালে আ.লীগের সুবিধাভোগী হয়েও ধরা-ছোয়ার বাইরে জেবুন্নেছা-বার্তা টাইমস বিডি

অনলাইন ডেস্কঃ ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনের ফসল হিসেবে ৫ আগস্ট পতন ঘন্টা বাজে আওয়ামী লীগ সরকারের। দলের প্রধান থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মীরাও মাশুল গুণছে গত ১৭ বছরে করা অন্যায় অত্যাচারের। তবে, বরিশালে সবকিছুর উর্ধ্বে যেন একটি নাম, “জেবুন্নেছা আফরোজ”! প্রয়াত স্বামী শওকত হোসেন হিরন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে গড়েছেন বিপুল বিত্ত-বৈভব। বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং সদর আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তার আকস্মিক মৃত্যুর পর সদর আসনে এমপি হন জেবুন্নেছা আফরোজ। পরবর্তীতে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগেও পদ পান। মরহুম হিরন ও জীবিত জেবুন্নেছার যত সম্পদ, বলা যায় সব হয়েছে আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকেই। অথচ আওয়ামী লীগের পতন হলেও তিনি রয়ে গেছেন ধরা-ছোয়ার বাইরে। ৫ আগস্টের পরে বরিশালে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যতগুলো মামলা হয়েছে, তার একটিতেও নাম নেই জেবুন্নেছার। অথচ, ১৭ বছরের হিসেব করতে গেলে এই সময়ে বরিশালের হাতেগোনা কয়েকজনের মধ্যে অন্যতম সুবিধাভোগী জেবুন্নেছা আফরোজ।

 

সূত্র মতে, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। সে সময় মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদারকে কুপিয়ে জখম করা হয়। সে ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও আসামি হননি জেবুন্নেছা। এরপরে অনেকগুলো মামলা হলেও কোনোটাতেই আসামির ঘরে নাম নেই তার।

 

এদিকে, সরকার পতনের পরপরই নিজের আক্ষেপ ঝেড়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের বিদায়ী মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতকে নিয়ে। স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, “শওকত হোসেন হিরনের ইমেজ ও তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর ভর করেই মেয়র হয়েছিলেন খোকন। কিন্তু মেয়রের চেয়ারের বসেই হিরনের রেখে যাওয়া বরিশালের একমাত্র শিশু পার্কের লাইসেন্স নবায়নের জন্য মেয়রকে কোটি টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন জেবুন্নেছা।” যদিও কিছু সময় পর ফেসবুক স্ট্যাটাস ডিলেট করে দেন তিনি। তখন জনমনে প্রশ্ন ওঠে, পার্কের নবায়নের জন্যই যদি কোটি টাকা দিয়ে থাকেন, তাহলে আওয়ামী লীগের সময়ে কত টাকার সম্পদ গড়েছেন তিনি ও প্রয়াত হিরন মিলে? আর তিনি নিয়মিত ভ্যাট-ট্যাক্স দেন কি-না, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য থাকাকালে শওকত হোসেন মৃত্যুবরণ করেন। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হলে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি হন জেবুন্নেসা আফরোজ। অভিযোগ আছে, শওকত হোসেন হিরনের ক্লিন ইমেজকে ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছিলেন তিনি এমপি নির্বাচিত হয়ে। ছোটখাটো বিষয়ের জন্য সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ঘুষ নিতেন, কাজ করে দিবেন বলে ঘুরাতেন। যেসব খাতের দিকে হিরন ফিরেও তাকাননি, সেসব খাত থেকেও ১/২ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন জেবুন্নেছা। এসব অভিযোগের কারণে পরবর্তীতে আর তাকে দল থেকে মনোনয়ন মেলেনি।

এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন আমরা এমনিতেই মহিলাদের ছাড় দিয়েছি, তার পর ও মামলা কেন হয়নি বিষয়টি দেখছি।

Tag :
About Author Information

Barta Times bd

জনপ্রিয়

নলছিটিতে সেই পরকীয়া প্রেমিক প্রেমিকা অবশেষে পুলিশের খাঁচায়

বরিশালে আ.লীগের সুবিধাভোগী হয়েও ধরা-ছোয়ার বাইরে জেবুন্নেছা-বার্তা টাইমস বিডি

আপডেট সময় : ০৩:২৭:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

অনলাইন ডেস্কঃ ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনের ফসল হিসেবে ৫ আগস্ট পতন ঘন্টা বাজে আওয়ামী লীগ সরকারের। দলের প্রধান থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মীরাও মাশুল গুণছে গত ১৭ বছরে করা অন্যায় অত্যাচারের। তবে, বরিশালে সবকিছুর উর্ধ্বে যেন একটি নাম, “জেবুন্নেছা আফরোজ”! প্রয়াত স্বামী শওকত হোসেন হিরন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে গড়েছেন বিপুল বিত্ত-বৈভব। বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং সদর আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তার আকস্মিক মৃত্যুর পর সদর আসনে এমপি হন জেবুন্নেছা আফরোজ। পরবর্তীতে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগেও পদ পান। মরহুম হিরন ও জীবিত জেবুন্নেছার যত সম্পদ, বলা যায় সব হয়েছে আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকেই। অথচ আওয়ামী লীগের পতন হলেও তিনি রয়ে গেছেন ধরা-ছোয়ার বাইরে। ৫ আগস্টের পরে বরিশালে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যতগুলো মামলা হয়েছে, তার একটিতেও নাম নেই জেবুন্নেছার। অথচ, ১৭ বছরের হিসেব করতে গেলে এই সময়ে বরিশালের হাতেগোনা কয়েকজনের মধ্যে অন্যতম সুবিধাভোগী জেবুন্নেছা আফরোজ।

 

সূত্র মতে, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। সে সময় মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদারকে কুপিয়ে জখম করা হয়। সে ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও আসামি হননি জেবুন্নেছা। এরপরে অনেকগুলো মামলা হলেও কোনোটাতেই আসামির ঘরে নাম নেই তার।

 

এদিকে, সরকার পতনের পরপরই নিজের আক্ষেপ ঝেড়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের বিদায়ী মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতকে নিয়ে। স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, “শওকত হোসেন হিরনের ইমেজ ও তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর ভর করেই মেয়র হয়েছিলেন খোকন। কিন্তু মেয়রের চেয়ারের বসেই হিরনের রেখে যাওয়া বরিশালের একমাত্র শিশু পার্কের লাইসেন্স নবায়নের জন্য মেয়রকে কোটি টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন জেবুন্নেছা।” যদিও কিছু সময় পর ফেসবুক স্ট্যাটাস ডিলেট করে দেন তিনি। তখন জনমনে প্রশ্ন ওঠে, পার্কের নবায়নের জন্যই যদি কোটি টাকা দিয়ে থাকেন, তাহলে আওয়ামী লীগের সময়ে কত টাকার সম্পদ গড়েছেন তিনি ও প্রয়াত হিরন মিলে? আর তিনি নিয়মিত ভ্যাট-ট্যাক্স দেন কি-না, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য থাকাকালে শওকত হোসেন মৃত্যুবরণ করেন। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হলে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি হন জেবুন্নেসা আফরোজ। অভিযোগ আছে, শওকত হোসেন হিরনের ক্লিন ইমেজকে ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছিলেন তিনি এমপি নির্বাচিত হয়ে। ছোটখাটো বিষয়ের জন্য সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ঘুষ নিতেন, কাজ করে দিবেন বলে ঘুরাতেন। যেসব খাতের দিকে হিরন ফিরেও তাকাননি, সেসব খাত থেকেও ১/২ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন জেবুন্নেছা। এসব অভিযোগের কারণে পরবর্তীতে আর তাকে দল থেকে মনোনয়ন মেলেনি।

এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন আমরা এমনিতেই মহিলাদের ছাড় দিয়েছি, তার পর ও মামলা কেন হয়নি বিষয়টি দেখছি।