
নিজস্ব প্রতিবেদক:: বরিশালের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের চার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার দিবাগত গভীর রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতয়ালী মডেল থানা ও গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পৃথক অভিযানে তারা গ্রেপ্তার হয়।
অভিযানে অংশ নেয়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক চন্দ্র সাহা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে একজন জুলাই অভ্যুত্থানে হামলা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ও বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি মমিন উদ্দিন কালু, ছাত্রলীগ নেতা অন্তু, রাব্বি এবং ছবির। তাদের মধ্যে মমিন উদ্দিন কালু জুলাই অভ্যুত্থানে হামলা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে সোমবার গভীর রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত নগরীর টিয়াখালী, হাটখোলা এবং আমতলার মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন তারা।
এসময় ওইসব এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মোমেন উদ্দিন কালুর নাম উল্লেখ করে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় গত জানুয়ারি মাসের ২৮ তারিখে একটি মামলা করেন।বাদি উল্লেখ করেন, গত ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ কোতোয়ালি মডেল থানা দিন ২০নং ওয়ার্ড নতুল্লাবাদ দিয়ে সড়ক ব্রিজের ঢালে টিভিএস শোরুম এর সামনে বরিশাল ঢাকা মহাসড়কের উপরে বরিশাল সদর কোতোয়ালি মডেল থানা থেকে আমি পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ও বগুড়া পুলিশ ফাড়ি এলাকায় অপরাধ সংগঠনের উদ্দেশ্যে বিস্ফোরণ ঘটানো বেআইনিভাবে অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত হইয়া একই উদ্দেশ্যে দাঙ্গা অনুষ্ঠান ও প্রতিরোধ করিয়া খুন করার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ মারপিট ও গুরুতর যখন করত এবং অগ্নিসংযোগ খুন যখন এর হুমকি প্রদান ও প্রদর্শন সহ বিভিন্ন হুকুম প্রধানের অপরাধ করে থাকতো এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে ছাত্র-জনতাকে প্রতিহত করতে আ-লীগ যুবলীগ ছাত্রলীগ কে সঙ্গে নিয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করে।
এসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,ও বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহ নির্দেশে মোমেন উদ্দিন কালু ও অন্যান্য আসামিরা ছাত্রদের ওপর দেশীয় অস্ত্র পিস্তল, রিভালবার, শর্টগান, হকিস্টিক, চাইনিজ কুড়াল ও গ্রেনেড বোমাসহ আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এতে কয়েকজন ছাত্র আহত হয় ও মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
উল্লেখ্য, মামলার অন্যতম আসামি মোমেন উদ্দিন কালু (৬০) বরিশাল বিসিসির ২৬ নং ওয়ার্ড এর টিয়াখালী চৌকিদার বাড়ির মৃত ওহাজ উদ্দিন হাওলাদার এর ছেলে।
বর্তমানে তিনি টিয়াখালি এলাকার বাসিন্দা।এক সময় সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরনের মোটরসাইকেলের ড্রাইভার ছিলেন শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যুর পর ঘোল পাল্টে সাদিক আব্দুল্লাহর বিশ্বস্ত সহযোগী হয়ে ফকির থেকে কোটিপতি হয়ে যান। দীর্ঘদিন ধরে মহানগর আ লীগের রাজনীতি করে আসছেন বলে জানা যায়।
তাদেরকে জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী দায়ের হওয়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।