
মাসুদ আহমেদ: প্রতিনিধি হিজলা (বরিশাল)
গত ১০ মার্চ (সোমবার) সম্রাট -২ লঞ্চ থেকে মা ও তার একমাত্র শিশু কন্যা নিখোঁজের একদিন পর শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার মেঘনা নদী থেকে লাশ উদ্ধার করেছে গোসাইরহাট থানা পুলিশ।
স্থানীয়ভাবে জানা যায় মৃতের স্বামী আঃ রহমান মাঝির বাড়ি বরিশালের হিজলা উপজেলার মেয়েমানিয়া ইউনিয়নের ইন্দুরিয়া গ্রামে,সে ইউসুপ মাঝির পুত্র। এ বিষয়ে মৃত তানিয়া বেগমের বাবা দুলাল হাওলাদার বলেন, সোমবার বিকেলে আমার মেয়েকে নির্যাতন করে তার শশুর বাড়ির লোকজন। কোন উপায়ন্তর না পেয়ে আমার বড় ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলে ঢাকা যাবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়।
পরে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার ভাসানচর নামক লঞ্চ ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া সম্রাট -২ লঞ্চটি রাত আনুমানিক সাড়ে ৮ টার দিকে গঙ্গাপুর নামক ঘাটে গেলে হিজলা উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়নের ইন্দুরিয়া লঞ্চ ঘাট থেকে আমার মেয়ে তানিয়া (৩০) ও তার শিশু কন্যা রাবেয়া (৪) কে সাথে নিয়ে ঢাকায় আমার বড় ছেলে আমির হোসেনের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্য লঞ্চযোগে রওনা দেয়।
এ সংবাদ শুনতে পেয়ে তানিয়ার স্বামী আব্দুর রহমান (৪০) ও তার বাবা ইউসুফ মাঝি সহ অন্যান্য লোকজন সঙ্গে নিয়ে টলার যোগে যাত্রী বেশে লঞ্চে ওঠেন এবং সুকৌশলে সবার অগোচরে আমার মেয়ে ও শিশু নাতনিকে লঞ্চ থেকে নামিয়ে আনেন। পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তাদের আর সন্ধান পাওয়া যায়নি, এ বিষয়ে আমার ছেলের সাথে যোগাযোগ করে আমি হিজলা থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে ডিউটি অফিসার আমাকে আমার মেয়েও নাতনির ছবি দেখান তখন ছবি দেখে তাদেরকে সনাক্ত করি। পরে খোঁজ নিলে ওই লঞ্চের কেবিন বয় আমাদেরকে জানান আমার মেয়েকে আনুমানিক সাড়ে দশটায় সময় ২১০ কেবিনে দেখতে পান। ওই লঞ্চ থেকে পরে আমার মেয়ের একটি বোরকা ও পার্স পাওয়া গিয়েছে।
তিনি আরো বলেন পারিবারিক কলহের বিষয়টি আমার ছেলেকে জানালে আমার ছেলে তাকে ঢাকায় যেতে বলে।
পরদিন ১১ই মার্চ সকাল ৮ টার দিকে শরিয়তপুর জেলার ঘোসাইরহাট থানাধীন মেঘনা নদী তীরবর্তী স্থানে ২টি লাশ ভাসতে দেখে ওই এলাকার লোকজন জরুরি সেবা ৯৯৯ কল করে।
তখন ঘোসাইরহাট থানা পুলিশ মৃতদেহ ২টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠান।
এবিষয়ে হিজলা থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন লাশ উদ্ধারের ঘটনাস্থল আমাদের হিজলা থানার বাইরে।তাই আমরা বিষয়টি শুনেছি তবে এই বিষয়ে গোসারহাট থানা ও হিজলা থানা মিলে কাজ চলমান রয়েছে।
অপরদিকে বরিশালের পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দিন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন গোসাইরহাট ও হিজলা ২ উপজেলার মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে ঘটনাস্থল নির্ধারণ করে মামলা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন প্রকৃত অপরাধীদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে, শুধু তাই নয় আমি এ বিষয়টি শরীয়তপুর জেলার পুলিশ সুপারকে অবহিত করেছি।
অন্যদিকে এ বিষয়ে ৩ জনকে আসামি করে গোসাইরহাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত তানিয়ার পিতা দুলাল হাওলাদার।