ঢাকা ১১:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরিশাল বিআরটিএ থেকে অবৈধ গাড়ির ফাইল গায়েব! ফেঁসে যেতে পারেন সাবেক কর্মকর্তা শাহআলম! পর্ব (১)

# দিয়েছেন অবৈধ প্রায় ১২শ গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন । # গড়েছেন প্রায় কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি।# বিআরটিএ থেকে ফাইল গায়েব।

 

বাংলাদেশ  সড়ক পরিবহন সংস্থা (বিআরটিএ) আর দুর্নীতি- এ দুটি যেন অভিন্ন সূত্রে গাঁথা। বিআরটিএ’র চেয়ার-টেবিলও দুর্নীতির ভাগিদার! সংস্থাটির বিভিন্ন কর্মকর্তা দুর্নীতির মাধ্যমে কেবল অর্থ লুটপাট করেছেন, তা নয়। দুর্নীতির প্রমাণ ঢাকতে গায়েব করে ফেলেছেন সরকারি নথি ও ফাইল।

এমনটি ঘটনা ঘটেছে বরিশাল বিআরটিএ অফিসে। অভিযোগ রয়েছে তৎকালীন সহকারী পরিচালক শাহআলম প্রায় ১২শ অবৈধ গাড়ির লাইসেন্স অনুমোদন দিয়েছেন। তবে সেই সব গাড়ির পুরো ফাইল গায়েব হয়ে গিয়েছে বিআরটিএ থেকে। আর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা  গত ৭ বছরেও উদ্ধার হয়নি এসব ফাইল।

চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী থেকে শুরু করে বড় কর্মকর্তারাও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে দুর্নীতির আঁখড়া বানিয়েছেন বিআরটিএকে। সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করে নিজেদের পকেট ভারি করেছেন বিআরটিএ’র সংঘবদ্ধ চক্র।

অভিযোগ অনুসন্ধানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,  যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, নবায়ন,  ফিটনেস, রুট পারমিটসহ নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতির কারণে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আত্মসাৎকৃত অর্থ চলে গেছে বিআরটিএ সংশ্লিষ্ট  সাবেক সহকারী পরিচালক শাহআলমের পকেটে।

গত ৮ বছরে বরিশাল,ঝালকাঠি,পিরোজপুরে বছরে বিআরটিএতে প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিআরটিএর ওপর প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে ও তদন্তে মাঠে নেমেছে উধ্বর্তন কর্মকর্তারা।

তথ্য সূত্র মতে জানা যায়, বেশ কিছু সরকারী গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েব হয়েছে বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর বিআরটিএ থেকে। নথি গায়েবের ঘটনায় সাবেক কর্মকর্তা শাহ আলমের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায় ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বরিশাল বিআরটিএর দায়িত্বে ছিলেন এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা শাহআলম । এর পূর্বে পিরোজপুর ও ঝালকাঠিতে দায়িত্বে থেকে প্রায় ৯থেকে ১হাজার অবৈধ গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন দিয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে ২২ সালে বরিশাল বিআরটিএতে যোগদান করেই মার্চে ৪টি (এপ্রিলে ২টি), (মে ৫টি),(জানুয়ারি মাসে ২১টি),(জুলাই মাসে ৪৫টি), (অক্টোবর মাসে১০টি) অর্থাৎ ২২সালের মার্চ হইতে অক্টোবর পর্যন্ত অবৈধ ২৫৫টি গাড়ি অসংগতিপূর্ণভাবে রেজিষ্ট্রেশন করেন।

এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে শাহআলমের অর্পকর্মের বিরুদ্ধে উপ পরিচালক( প্রশাসন) ঢাকা তিনি  গত ২৯/১১/২০২২সালে, ৩৫,০৩,০০০০,০০১,২৭,০২২৭ স্বরক নাম্বারে তিনজনের একটি কমিটি করে ১৫ দিনের ভিতর তদন্ত প্রতিবেদক জমা দিতে আদেশে উল্লেখ করেন।

তবে অবৈধ আয়ের পথ বন্ধ করেন নি শাহ আলম। ২৫৫টি গাড়ির তদন্ত চলাকালীন সময় তিনি পূনরায় আবার ২২সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মানেই বরিশাল-ন-১১-০৭২০, বরিশাল-ন-১১-০৭৪৮, বরিশাল-ন-১১-০৭২১, বরিশাল-ন-১১-০৭৪৯, বরিশাল-ন-১১-০৭২২, বরিশাল-ন-১১-০৭৫০, বরিশাল-ন-১১-০৭২৩, বরিশাল-ন-১১-০৭৫১ বরিশাল-ন-১১-০৭২৪ সহ প্রায় ৮৯টি অবৈধ গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন  প্রদান করেন।  যার প্রতিটি রেজিষ্ট্রেশন মালিকের ঠিকানা চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলায় এবং রেজিষ্ট্রেশনকৃত গাড়ির মালিক ওই বিভাগের স্থানীয় বাসিন্দা ও ভোটার। যা বিআরটিএর আইন ও অফিস আদেশ অমান্য করে মোটা অংকের বিনিময়  এসব রেজিষ্ট্রেশন দিয়েছেন বরিশাল বিআরটিএর দুর্নীতিবাজ সাবেক সহকারী পরিচালক শাহআলম।

যে বিষয়টি নিয়ে পুনরায় দ্বিতীয় বার  ২০/ ০৭/২০২৩ সালে ৩৫,০৩,০০০০,০০১,২৭,০২২ স্বরক নাম্বারে একটি অফিস আদেশে সিরাজুল ইসলাম পরিচালক (প্রশিক্ষন) ঢাকা আহ্বায়ক,  আব্দুর রাজ্জাক উপ পরিচালক (প্রশাসন)ঢাকা সদস্য ও মশিউর রহমান সহকারী মেইন্টেন্যাস ইঞ্জিনিয়ার ঢাকা সদস্য সচিব করে কমিটি গঠন করে  ১৫ দিনের ভিতর তদন্ত প্রতিবেদক জমা দিতে আদেশ করেন।

এদিকে অনুসন্ধানে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম বন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে বন্দরে গাড়ি আসে। ওইসব গাড়িতে সরকার নিধারিত কর জমা দেয়া লাগে যা কারনে ১টি গাড়ি ৫লক্ষ টাকা ক্রয় করলে করসহ প্রায় ৭/৮লক্ষ টাকা খরচ পরে।  তাই বিভিন্ন দেশ থেকে ঠিকাদার কোম্পানি গাড়ি কিনে কেটে টুকরা টুকরা করে ভাঙ্গাচুরা ( ভাঙ্গারি) হিসাবে বাংলাদেশে বন্দরে আনে। পরে ওই সব গাড়ি বিভিন্ন কোম্পানিতে নিয়ে জোড়া লাগিয়ে পূর্ণএকটি গাড়িতে রুপ নেয় এবং ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে দেশের বিভিন্ন বিআরটিএতে অবৈধ ভাবে রেজিষ্ট্রেশন করেন। যা পুরোপুরি দুর্নীতি ও আইনকে অমান্য করা।

অপরদিকে জানা যায়, বরিশাল বিআরটিএর  সাবেক কর্মকর্তা শাহআলম যে গাড়ি গুলো রেজিষ্ট্রেশন দিয়েছেন প্রতিটি গাড়ির নথিপত্র গায়েব হয়ে গিয়েছে।

যেখানে নিজেকে বাঁচাতে এমন কাজ করেছে বলে মন্তব্য কর্মকর্তারা।

 

একটি চিঠিতে দেখাযায় , বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি তৎকালীন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের একটি স্বাক্ষরিত ২২-০৭-২০১৫ সালে অফিসে আদেশে তিনি উল্লেখ করেন,   মোটরযান বিধিমালা, ১৯৮৪ এর বিধি-৫৬ দনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকার এখতিয়ার সম্পন্ন বিআরটিএ’র সহকারি পরিচালক (ইঞ্জি:) হবে ওই এলাকার মোটরযান রেজিস্ট্রেশন, কর্তৃপক্ষ। এছাড়া, মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ষষ্ঠ তফসিল অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকা বা জেলার উপর কর্তৃত্বকারী রেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষ ওই এলাকা বা জেলার রেজিস্ট্রেশন মার্ক প্রদান  করবেন।

মোটরযান ধিমালা, ১৯৮৪ এর বিধি-৫৭ (২) (বি) অনুযায়ী ইনভয়েস বা বিক্রয় রসিদে মালিকের ঠিকানা ব্যতীত রেজিস্ট্রেশনের আবেদনপত্রে অন্য কোনো ঠিকানা উল্লেখ করা যাবে না এবং মোটরযান বিধিমালা, ১৯৮৪ এর বিধি-৫৭(৬) (বি) অনুযায়ী আবেদনপত্রে কেবলমাত্র একটি ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে যার সাথে ইনভয়েস বা বিক্রয় রসিদে বর্ণিত ঠিকানার সাথে মিল থাকতে হবে। সুতরাং একাধিক ঠিকানা সম্বলিত কোনো আবেদনপত্র > ইনভয়েস বা বিক্রয় রসিদ গ্রহণযোগ্য নয়। এমতাবস্থায়, একাধিক ঠিকানা সম্বলিত আবেদনপত্র বা ইনভয়েস বা বিক্রয় রসিদে মোটরযান রেজিস্ট্রেশন প্রদান না করতে এবং অধিক্ষেত্র বহির্ভূত এলাকার মোটরযান রেজিস্ট্রেশন প্রদান থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট সকল রেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা হলো। নির্দেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে • আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে এই আদেশ উপেক্ষা করেই দূর্নীতিবাজ শাহ আলম অবৈধ ভাবে রেজিষ্ট্রেশন  অনুমোদন দেন।

এবিষয় বরিশাল বিআরটিএ’র সাবেক সহকারী পরিচালক শাহআলম বলেন, আমি ৭ মিনিটের একটি গাড়ির লাইসেন্স প্রদান করি। তাই চট্টগ্রামসহ দেশে বিভিন্ন স্থান থেকে গাড়ির মালিকরা আমার কাছে আসে। আর আমি প্রায় ৬ হাজার গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন  দিয়েছি। আমি বিআরটিএর চেয়ারম্যানের আদেশ মানি নাই,আমি ঢাকাকে ফলো করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা গাড়ির মালিকদের রেজিষ্ট্রেশন  দিয়েছি। আমি অপরাধী হলে বরিশাল বিভাগীয় কর্মকর্তা জিয়াউর  তিনিও আমাকে দূর্নীতি করতে সাহায্যে করেছে।

 

তবে বরিশাল বিআরটিএর বিভাগীয় পরিচালক জিয়াউর তিনি বলেন,  বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। এখন কোন মন্তব্য করতে চাই না। তবে যে পাপ করবে সেই কর্মফল ভোগ করবে।

 

Tag :
About Author Information

Barta Times bd

জনপ্রিয়

নলছিটিতে সেই পরকীয়া প্রেমিক প্রেমিকা অবশেষে পুলিশের খাঁচায়

বরিশাল বিআরটিএ থেকে অবৈধ গাড়ির ফাইল গায়েব! ফেঁসে যেতে পারেন সাবেক কর্মকর্তা শাহআলম! পর্ব (১)

আপডেট সময় : ০৪:১১:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

# দিয়েছেন অবৈধ প্রায় ১২শ গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন । # গড়েছেন প্রায় কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি।# বিআরটিএ থেকে ফাইল গায়েব।

 

বাংলাদেশ  সড়ক পরিবহন সংস্থা (বিআরটিএ) আর দুর্নীতি- এ দুটি যেন অভিন্ন সূত্রে গাঁথা। বিআরটিএ’র চেয়ার-টেবিলও দুর্নীতির ভাগিদার! সংস্থাটির বিভিন্ন কর্মকর্তা দুর্নীতির মাধ্যমে কেবল অর্থ লুটপাট করেছেন, তা নয়। দুর্নীতির প্রমাণ ঢাকতে গায়েব করে ফেলেছেন সরকারি নথি ও ফাইল।

এমনটি ঘটনা ঘটেছে বরিশাল বিআরটিএ অফিসে। অভিযোগ রয়েছে তৎকালীন সহকারী পরিচালক শাহআলম প্রায় ১২শ অবৈধ গাড়ির লাইসেন্স অনুমোদন দিয়েছেন। তবে সেই সব গাড়ির পুরো ফাইল গায়েব হয়ে গিয়েছে বিআরটিএ থেকে। আর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা  গত ৭ বছরেও উদ্ধার হয়নি এসব ফাইল।

চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী থেকে শুরু করে বড় কর্মকর্তারাও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে দুর্নীতির আঁখড়া বানিয়েছেন বিআরটিএকে। সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করে নিজেদের পকেট ভারি করেছেন বিআরটিএ’র সংঘবদ্ধ চক্র।

অভিযোগ অনুসন্ধানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,  যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, নবায়ন,  ফিটনেস, রুট পারমিটসহ নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতির কারণে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আত্মসাৎকৃত অর্থ চলে গেছে বিআরটিএ সংশ্লিষ্ট  সাবেক সহকারী পরিচালক শাহআলমের পকেটে।

গত ৮ বছরে বরিশাল,ঝালকাঠি,পিরোজপুরে বছরে বিআরটিএতে প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিআরটিএর ওপর প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে ও তদন্তে মাঠে নেমেছে উধ্বর্তন কর্মকর্তারা।

তথ্য সূত্র মতে জানা যায়, বেশ কিছু সরকারী গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েব হয়েছে বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর বিআরটিএ থেকে। নথি গায়েবের ঘটনায় সাবেক কর্মকর্তা শাহ আলমের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায় ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বরিশাল বিআরটিএর দায়িত্বে ছিলেন এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা শাহআলম । এর পূর্বে পিরোজপুর ও ঝালকাঠিতে দায়িত্বে থেকে প্রায় ৯থেকে ১হাজার অবৈধ গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন দিয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে ২২ সালে বরিশাল বিআরটিএতে যোগদান করেই মার্চে ৪টি (এপ্রিলে ২টি), (মে ৫টি),(জানুয়ারি মাসে ২১টি),(জুলাই মাসে ৪৫টি), (অক্টোবর মাসে১০টি) অর্থাৎ ২২সালের মার্চ হইতে অক্টোবর পর্যন্ত অবৈধ ২৫৫টি গাড়ি অসংগতিপূর্ণভাবে রেজিষ্ট্রেশন করেন।

এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে শাহআলমের অর্পকর্মের বিরুদ্ধে উপ পরিচালক( প্রশাসন) ঢাকা তিনি  গত ২৯/১১/২০২২সালে, ৩৫,০৩,০০০০,০০১,২৭,০২২৭ স্বরক নাম্বারে তিনজনের একটি কমিটি করে ১৫ দিনের ভিতর তদন্ত প্রতিবেদক জমা দিতে আদেশে উল্লেখ করেন।

তবে অবৈধ আয়ের পথ বন্ধ করেন নি শাহ আলম। ২৫৫টি গাড়ির তদন্ত চলাকালীন সময় তিনি পূনরায় আবার ২২সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মানেই বরিশাল-ন-১১-০৭২০, বরিশাল-ন-১১-০৭৪৮, বরিশাল-ন-১১-০৭২১, বরিশাল-ন-১১-০৭৪৯, বরিশাল-ন-১১-০৭২২, বরিশাল-ন-১১-০৭৫০, বরিশাল-ন-১১-০৭২৩, বরিশাল-ন-১১-০৭৫১ বরিশাল-ন-১১-০৭২৪ সহ প্রায় ৮৯টি অবৈধ গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন  প্রদান করেন।  যার প্রতিটি রেজিষ্ট্রেশন মালিকের ঠিকানা চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলায় এবং রেজিষ্ট্রেশনকৃত গাড়ির মালিক ওই বিভাগের স্থানীয় বাসিন্দা ও ভোটার। যা বিআরটিএর আইন ও অফিস আদেশ অমান্য করে মোটা অংকের বিনিময়  এসব রেজিষ্ট্রেশন দিয়েছেন বরিশাল বিআরটিএর দুর্নীতিবাজ সাবেক সহকারী পরিচালক শাহআলম।

যে বিষয়টি নিয়ে পুনরায় দ্বিতীয় বার  ২০/ ০৭/২০২৩ সালে ৩৫,০৩,০০০০,০০১,২৭,০২২ স্বরক নাম্বারে একটি অফিস আদেশে সিরাজুল ইসলাম পরিচালক (প্রশিক্ষন) ঢাকা আহ্বায়ক,  আব্দুর রাজ্জাক উপ পরিচালক (প্রশাসন)ঢাকা সদস্য ও মশিউর রহমান সহকারী মেইন্টেন্যাস ইঞ্জিনিয়ার ঢাকা সদস্য সচিব করে কমিটি গঠন করে  ১৫ দিনের ভিতর তদন্ত প্রতিবেদক জমা দিতে আদেশ করেন।

এদিকে অনুসন্ধানে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম বন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে বন্দরে গাড়ি আসে। ওইসব গাড়িতে সরকার নিধারিত কর জমা দেয়া লাগে যা কারনে ১টি গাড়ি ৫লক্ষ টাকা ক্রয় করলে করসহ প্রায় ৭/৮লক্ষ টাকা খরচ পরে।  তাই বিভিন্ন দেশ থেকে ঠিকাদার কোম্পানি গাড়ি কিনে কেটে টুকরা টুকরা করে ভাঙ্গাচুরা ( ভাঙ্গারি) হিসাবে বাংলাদেশে বন্দরে আনে। পরে ওই সব গাড়ি বিভিন্ন কোম্পানিতে নিয়ে জোড়া লাগিয়ে পূর্ণএকটি গাড়িতে রুপ নেয় এবং ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে দেশের বিভিন্ন বিআরটিএতে অবৈধ ভাবে রেজিষ্ট্রেশন করেন। যা পুরোপুরি দুর্নীতি ও আইনকে অমান্য করা।

অপরদিকে জানা যায়, বরিশাল বিআরটিএর  সাবেক কর্মকর্তা শাহআলম যে গাড়ি গুলো রেজিষ্ট্রেশন দিয়েছেন প্রতিটি গাড়ির নথিপত্র গায়েব হয়ে গিয়েছে।

যেখানে নিজেকে বাঁচাতে এমন কাজ করেছে বলে মন্তব্য কর্মকর্তারা।

 

একটি চিঠিতে দেখাযায় , বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি তৎকালীন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের একটি স্বাক্ষরিত ২২-০৭-২০১৫ সালে অফিসে আদেশে তিনি উল্লেখ করেন,   মোটরযান বিধিমালা, ১৯৮৪ এর বিধি-৫৬ দনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকার এখতিয়ার সম্পন্ন বিআরটিএ’র সহকারি পরিচালক (ইঞ্জি:) হবে ওই এলাকার মোটরযান রেজিস্ট্রেশন, কর্তৃপক্ষ। এছাড়া, মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ষষ্ঠ তফসিল অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকা বা জেলার উপর কর্তৃত্বকারী রেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষ ওই এলাকা বা জেলার রেজিস্ট্রেশন মার্ক প্রদান  করবেন।

মোটরযান ধিমালা, ১৯৮৪ এর বিধি-৫৭ (২) (বি) অনুযায়ী ইনভয়েস বা বিক্রয় রসিদে মালিকের ঠিকানা ব্যতীত রেজিস্ট্রেশনের আবেদনপত্রে অন্য কোনো ঠিকানা উল্লেখ করা যাবে না এবং মোটরযান বিধিমালা, ১৯৮৪ এর বিধি-৫৭(৬) (বি) অনুযায়ী আবেদনপত্রে কেবলমাত্র একটি ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে যার সাথে ইনভয়েস বা বিক্রয় রসিদে বর্ণিত ঠিকানার সাথে মিল থাকতে হবে। সুতরাং একাধিক ঠিকানা সম্বলিত কোনো আবেদনপত্র > ইনভয়েস বা বিক্রয় রসিদ গ্রহণযোগ্য নয়। এমতাবস্থায়, একাধিক ঠিকানা সম্বলিত আবেদনপত্র বা ইনভয়েস বা বিক্রয় রসিদে মোটরযান রেজিস্ট্রেশন প্রদান না করতে এবং অধিক্ষেত্র বহির্ভূত এলাকার মোটরযান রেজিস্ট্রেশন প্রদান থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট সকল রেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা হলো। নির্দেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে • আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে এই আদেশ উপেক্ষা করেই দূর্নীতিবাজ শাহ আলম অবৈধ ভাবে রেজিষ্ট্রেশন  অনুমোদন দেন।

এবিষয় বরিশাল বিআরটিএ’র সাবেক সহকারী পরিচালক শাহআলম বলেন, আমি ৭ মিনিটের একটি গাড়ির লাইসেন্স প্রদান করি। তাই চট্টগ্রামসহ দেশে বিভিন্ন স্থান থেকে গাড়ির মালিকরা আমার কাছে আসে। আর আমি প্রায় ৬ হাজার গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন  দিয়েছি। আমি বিআরটিএর চেয়ারম্যানের আদেশ মানি নাই,আমি ঢাকাকে ফলো করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা গাড়ির মালিকদের রেজিষ্ট্রেশন  দিয়েছি। আমি অপরাধী হলে বরিশাল বিভাগীয় কর্মকর্তা জিয়াউর  তিনিও আমাকে দূর্নীতি করতে সাহায্যে করেছে।

 

তবে বরিশাল বিআরটিএর বিভাগীয় পরিচালক জিয়াউর তিনি বলেন,  বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। এখন কোন মন্তব্য করতে চাই না। তবে যে পাপ করবে সেই কর্মফল ভোগ করবে।