ঢাকা ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাশিয়ার তেল পাচ্ছে উত্তর কোরিয়া, বিনিময়ে চলছে ইউক্রেন যুদ্ধে অস্ত্র ও সৈন্য সরবরাহ

অনলাইন ডেস্ক:: রাশিয়া ২০২৪ সালের মার্চ থেকে উত্তর কোরিয়াকে এক মিলিয়নের বেশি ব্যারেল তেল সরবরাহ করেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওপেন সোর্স সেন্টার এই দাবি করেছে। স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই তথ্য উদঘাটিত হয়েছে।

তেল সরবরাহের বিনিময়ে উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য অস্ত্র ও সৈন্য সরবরাহ করছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি এবং বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এ ধরনের লেনদেন জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার সরাসরি লঙ্ঘন।

উত্তর কোরিয়ায় সীমিত পরিমাণ তেল সরবরাহের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দেশটির অর্থনীতিকে দুর্বল করে পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়ন রোধের লক্ষ্য নিয়ে এটা করা হয়েছিল।

বিবিসির কাছে শেয়ার করা স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, গত আট মাসে উত্তর কোরিয়ার ১২টিরও বেশি তেলবাহী ট্যাংকার রাশিয়ার ফার ইস্ট অঞ্চলের একটি তেল টার্মিনালে ৪৩ বার পৌঁছেছে। চিত্রে দেখা যায়, ট্যাংকারগুলো খালি অবস্থায় রাশিয়ায় পৌঁছায় এবং তেল নিয়ে ফিরে যায়।

ওপেন সোর্স সেন্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই তেল সরবরাহ উত্তর কোরিয়াকে এমন এক স্থিতিশীলতা দিচ্ছে, যা জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে দেশটি পায়নি।

জাতিসংঘের সাবেক চারজন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া সম্পর্ক ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। এই সম্পর্কের প্রভাব আন্তর্জাতিক নিরাপত্তায় পড়ছে। বিশেষজ্ঞ হিউ গ্রিফিথস বলেন, এই লেনদেন পুতিনের যুদ্ধযন্ত্রকে শক্তিশালী করছে। এটি হলো তেলের বিনিময়ে ক্ষেপণাস্ত্র, গোলাবারুদ এবং এখন সৈন্য সরবরাহ।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বিবিসিকে বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে টিকে থাকার জন্য রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার ওপর ক্রমশ নির্ভরশীল হয়ে উঠছে। এটি কোরিয়ান উপদ্বীপ, ইউরোপ এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তায় সরাসরি প্রভাব ফেলছে।

রাশিয়ার তেলের সরবরাহ জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। এই নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়া বছরে সর্বোচ্চ ৫ লাখ ব্যারেল পরিশোধিত তেল পেতে পারে, যা দেশটির প্রকৃত চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তবে চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই লেনদেন শুধু রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ককেই জোরদার করছে না, বরং ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Tag :
About Author Information

Barta Times bd

জনপ্রিয়

নলছিটিতে সেই পরকীয়া প্রেমিক প্রেমিকা অবশেষে পুলিশের খাঁচায়

রাশিয়ার তেল পাচ্ছে উত্তর কোরিয়া, বিনিময়ে চলছে ইউক্রেন যুদ্ধে অস্ত্র ও সৈন্য সরবরাহ

আপডেট সময় : ০৬:৩৪:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

অনলাইন ডেস্ক:: রাশিয়া ২০২৪ সালের মার্চ থেকে উত্তর কোরিয়াকে এক মিলিয়নের বেশি ব্যারেল তেল সরবরাহ করেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওপেন সোর্স সেন্টার এই দাবি করেছে। স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই তথ্য উদঘাটিত হয়েছে।

তেল সরবরাহের বিনিময়ে উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য অস্ত্র ও সৈন্য সরবরাহ করছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি এবং বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এ ধরনের লেনদেন জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার সরাসরি লঙ্ঘন।

উত্তর কোরিয়ায় সীমিত পরিমাণ তেল সরবরাহের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দেশটির অর্থনীতিকে দুর্বল করে পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়ন রোধের লক্ষ্য নিয়ে এটা করা হয়েছিল।

বিবিসির কাছে শেয়ার করা স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, গত আট মাসে উত্তর কোরিয়ার ১২টিরও বেশি তেলবাহী ট্যাংকার রাশিয়ার ফার ইস্ট অঞ্চলের একটি তেল টার্মিনালে ৪৩ বার পৌঁছেছে। চিত্রে দেখা যায়, ট্যাংকারগুলো খালি অবস্থায় রাশিয়ায় পৌঁছায় এবং তেল নিয়ে ফিরে যায়।

ওপেন সোর্স সেন্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই তেল সরবরাহ উত্তর কোরিয়াকে এমন এক স্থিতিশীলতা দিচ্ছে, যা জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে দেশটি পায়নি।

জাতিসংঘের সাবেক চারজন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া সম্পর্ক ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। এই সম্পর্কের প্রভাব আন্তর্জাতিক নিরাপত্তায় পড়ছে। বিশেষজ্ঞ হিউ গ্রিফিথস বলেন, এই লেনদেন পুতিনের যুদ্ধযন্ত্রকে শক্তিশালী করছে। এটি হলো তেলের বিনিময়ে ক্ষেপণাস্ত্র, গোলাবারুদ এবং এখন সৈন্য সরবরাহ।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বিবিসিকে বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে টিকে থাকার জন্য রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার ওপর ক্রমশ নির্ভরশীল হয়ে উঠছে। এটি কোরিয়ান উপদ্বীপ, ইউরোপ এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তায় সরাসরি প্রভাব ফেলছে।

রাশিয়ার তেলের সরবরাহ জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। এই নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়া বছরে সর্বোচ্চ ৫ লাখ ব্যারেল পরিশোধিত তেল পেতে পারে, যা দেশটির প্রকৃত চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তবে চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই লেনদেন শুধু রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ককেই জোরদার করছে না, বরং ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।