নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের হিজলা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দরিদ্রদের মধ্যে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির (ভিজিএফ) আওতায় চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। ইউপি থেকে রসিদের (স্লিপ) মাধ্যমে প্রতি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া কথা থাকলেও গৌরবদী ইউনিয়নে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হিজলা গৌরবদী ইউনিয়নে ৩২শ ৯১টি কার্ডের বিপরীতে চাল বরাদ্দ ছিলো ৩২.৯১ মেট্রিটন। বরাদ্দকৃত চাল ২৭শে মার্চের মধ্যে বিতরণ করার কথা থাকলেও বিতরণ না করে ২৯শে মার্চ নাম মাত্র কিছু চাল উত্তলন করে বিতরন করা করা হয়।
অভিযোগে আরো জানা যায়, বাকি চাল ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ( সচিব) শাহিন সরদার, সংরক্ষিত ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার রাবেয়া বসরী তন্নী ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার মহিউদ্দিন মিলে আত্মসাৎ করেছেন বলে একাধীক লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লিখিত অভিযোগকারী ( ছদ্মনাম) মামুন বলেন, যারা সরকারী চাল পাপ্য ছিলো তাদের চাল দেয় নি। মুখ চিনে তাদের কাছের লোকজনদের সাথে নিয়ে নাম মাত্র কিছু চাল বিরতণ করেছে। বাকি চাল গায়েব করে দিয়েছেন মেম্বার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ একাধিক ব্যক্তি। এবিষয় আমরা ইউএনও ও জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দেবো।
এবিষয় অভিযুক্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও হিজলা গৌরবদী ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার মহিউদ্দিনের ০১৭১২৭২০... নাম্বারে একাধিকবার কল দিলে তিনি কল রিসিভ করেন নি।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, হিজলার গৌরবদী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মিলন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সম্পৃক্ত থাকায় তিনি প্রায় ৫শে আগষ্টের পরপরই পলাতক রয়েছে। সেই সুবাদে ইউনিয়নে প্যানেল চেয়ারম্যান থাকার পরও তাকে দায়িত্ব না দিয়ে বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকা সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার রাবেয়া তন্নীকে দায়িত্ব দেয়া হয়। যেখানে বৈষম্য দূর করার কথা থাকলেও সেখানে বৈষম্য রেখে নিজেদের প্রভাব খাটাচ্ছেন ইউপি সদস্য । এছাড়াও প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহিন ইউনিয়ন পরিষদ লুটেপুটে খাচ্ছে। শাহিন নিজেকে নিয়ে গেছেন দূর্ণীতির উচ্চতায়। শাহিন বিএনপির একটি প্রভাব খাঁটিয়ে অনিয়ম ও দূর্ণীতির একটি আতুড়ঘর তৈরি করেছে পুরো ইউনিয়নে।
তবে এ বিষয়ে হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইলিয়াস হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিষয়টি যদিও আমি অবগত নই তার পরেও কেউ যদি চাল বিতরণে অনিয়ম করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইন আনুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপরদিকে, অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) শাহিন সরদার মুঠোফোনে বলেন, আমরা সব চাল বিতরণ করেছি। আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা। আমাদের মাস্টাররুল আছে। বিতরণের বিষয়টি ইউএনও স্যার জানেন। আপনারা যাচাই করে দেখেন আমরা দোষী নই।
এদিকে অভিযুক্ত সংরক্ষিত মেম্বার রাবেয়া তন্নী মুঠোফোনে বলেন, চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের মেম্বাররা সব পলাতক। তাই একপর্যায়ে আমাকে প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব জোড় করে দেয়া হয়েছে। আমি পুরো চাল ইউনিয়নে সকলের মাঝে বিতরণ করেছি। মাত্র ৮জনার চাল এখনো আমাদের গুদামে রয়েছে। যদি কেউ আসে ওই চালও তাদের মাঝে বিতরণ করা হবে। আর অভিযোগ যে কেউ দিতে পারে। ইউনিয়নে বিএনপি, জামায়াতে কি করে সেটা আপনিও জানেন আমিও জানি। হয়তো মুখে বলতে পারি না। তাই আমি ও আমার স্বামী দুজনে মিলে চাল বিতরণ করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা।