বার্তা টাইমস বিডি ডেস্ক :: বরিশালে পুলিশকে ফাঁসাতেই কি মামলা করা হয়েছে? এমন একটি প্রশ্নের সমলোচনার ঝড় উঠেছে নগরী জুড়ে।
চায়ের দোকান থেকে শুরু করে কলোনী মহল্লার বাসিন্দাদের একই প্রশ্ন সত্যিই কি পুলিশ সেদিন স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের আন্দোলনে এক নারী শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানী ও হেনস্তার করেছে?
না কি পুলিশকে ফাঁসাতে একটি পক্ষ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে?
অনুসন্ধানে জানা যায়, বরিশালে গত আগষ্ট মাসে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের নিয়ে উওাল ছিল বরিশাল। শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলার এক আসামি যিনি পুর্বে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাথে জড়িত ছিল এবং ২ হাতে ২টি বড় দা সহ তার একটি ছবি ভাইরালও হওয়ার পর যাতে স্বাস্থ্য খাত আন্দোলনে কোন অরাজক পরিস্থিতি না ঘটে সেজন্য গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিওিতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ওই দিনের ঘটনার একটি ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে গাড়িতে তোলার জন্য প্রস্তুতি নেয়। ঠিক ওই সময় পুলিশকে লক্ষ করে স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেয়। এসময় তাৎক্ষনিক অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে পুলিশের গাড়িতে উঠাতে গেলে পুলিশের কাজের বাধা দিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন শিক্ষার্থীরা এবং দুই পুলিশ সদস্য অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ কর্মীর কোমড়ে প্যান্টে হাত দিয়ে ধরে রাখার ৯ সেকেন্ট পরই পুলিশ সদস্যরাদের সড়াতে গিয়ে ২ নারী শিক্ষার্থী পুলিশের হাত ধরে টানাহেঁচড়া করে। পরে পুলিশের সাথে ওই সময় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাড়িয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের সাথে টানাহেঁচড়ার ঘটনা ঘটে।
ভিডিওতে আরো দেখাযায়, এ সময় ২ নারী সহ কয়েকজন আন্দোলনকারী ঐ ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাড়িয়ে নিতে অভিযানে থাকা পুলিশ সদস্যদের সাথে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পরেন। এক পর্যায় পুলিশ ওই অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে গাড়িতে উঠাতে সক্ষম হলেও ৫ থেকে ৬জন শিক্ষার্থী পুলিশের গাড়িতে স্বেচ্ছায় উঠে বসেন।
যদিও পরে তারা আবার স্বেচ্ছায় গাড়ি থেকে নেমে চলে যান। এ ঘটনায় নারী কর্মীকে শ্লীলতাহানী ও হেনস্তার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেছেন সিএন্ডবি পোল থানাকাউন্সিল পেশকার বাড়ির মসজিদ গলির বাসিন্দা তাসমিন ইয়াসমিন নামক এক ব্যক্তি।
মারধর ও শ্লীলতাহানিসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মেট্রোপলিটন কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) এবং মেট্রো ডিবির ওসি ছগির হোসেন সহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে করা মামলা দুদককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গত সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) বরিশাল মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মীর মো. এমতাজুল হক এ নির্দেশ দিয়েছেন বলে বেঞ্চ সহকারী মো. শাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান, ডিবি পুলিশ পরিদর্শক সগীর হোসেন, কোতয়ালী মডেল থানার এসআই সাইফুল ইসলাম, স্টিমারঘাট পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এসআই নাসিম বাইজিদ, কনস্টেবল বিশ্বজিৎ। এছাড়াও এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১২ জনকে আসামি করা হয়।
তবে এ বিষয়ে পুলিশের একটি সূত্র বলছে,শ্লীলতাহানী ও হেনস্তার অভিযোগ পুরোটাই মিথ্যা। এখানে পুলিশের ইমেজ নষ্ট করতে কেউ তাদের ব্যবহার করছে। ঘটনার সময় বরিশাল নগর ভবনের সামনে থেকে ছাত্রলীগের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় ওই আটককৃত ব্যক্তিকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। আর এসব পরিস্থিতিতে পুলিশ কখনোই কারো উপর হামলা বা শ্লীলতাহানী বা হেনস্তার করার প্রশ্নই আসে না। যেটা ভিডিও দেখলেই পাওয়া যাবে।
তবে ঘটনার সময় ওই অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীকে আটকের পর নারীসহ ৫/৬ জন মিছিল করতে করতে পুলিশ পিকআপে ওঠেন। তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। তারা পরে আবার স্বেচ্ছায় গাড়ি থেকে নেমে চলে গেছে। তাছাড়া মামলায় উল্লেখ করা হয়, পুলিশ বাদীর কাছে মোটা অংকের অর্থ ঘুষ দাবি করেছে? যা এমন পরিস্থিতিতে আইনের প্রতি সম্মান রেখে পুলিশ কখনোই দেশদ্রোহ কাজ করবে না। আর এখানে শ্লীলতাহানি কিংবা মারধরের কোন প্রশ্নই আসে না।