নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে বহুবিবাহ ও প্রতারণার যে অভিযোগ সম্প্রতি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবী করেছেন তিনি।
প্রকাশিত সংবাদে দাবী করা হয়েছে, মো. কবির হোসেন পাটওয়ারী নাকি ১৭ জন নারীকে বিয়ে করেছেন। অথচ প্রতিবেদনে খাদিজা আক্তার ছাড়া ওই কথিত “স্ত্রীদের” কারও নাম, ঠিকানা বা সুনির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। সংবাদটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও তথ্য-প্রমাণবিহীন বলেই মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
জানাগেছে, অনিয়ম দুর্নীতির দায়ে বরিশাল বন বিভাগের সাবেক (ডিএফও)ড. মোঃ আব্দুল আউয়ালকে ২০২৪ সালের ১১ মার্চ ওএসডি করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের হেড কোয়াটার্সে সংযুক্ত করা হলেও তার ঘনিষ্ট সহচর এম.এম. কর্পোরেশনের সত্বাধিকারী মাহফুজুর রহমান মিলনের কজ্বায় এখনও রয়েগেছে বরিশাল বিভাগীয় বন। বর্তমানে তাঁর ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করতে না পেরে (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে এই অপপ্রচারের নেপথ্যে কল-কাঠি নেড়ে চলেছেন বলে বিভিন্ন অসমর্থিত সূত্র নিশ্চিত করেছেন। বন বিভাগের বিভিন্ন উন্নয়নকাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করায় ঠিকাদারী স্বার্থ ক্ষুন্ন হওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং একটি স্বার্থান্বেষী মহলের সঙ্গে মিলন হাত মিলিয়ে মো. কবির হোসেন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ ছড়িয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। শুধু সংবাদেই নয় এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে নামে-বেনামে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ডিএফও কবির হোসেনকে হয়রানী করে আসছে বলে জানাগেছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কর্মকর্তা আদালতের শরণাপন্ন হলে মহামান্য হাইকোর্ট তাঁর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব অভিযোগের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। তবুও গত বৃহস্পতিবার ১১ সেপ্টেম্বর তাঁকে হয়রানির উদ্দেশ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব সাইদুর রহমান তদন্তের নামে কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ে এসে (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটওয়ারীকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ঢাকা থেকে যুগ্ন সচিব সাইদুর রহমান কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার সাথে সাথে সেখানে বিভিন্ন মিডিয়ার প্রায় ডজনখানেক রিপোর্টার উপস্থিত হন। একই সাথে কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ের মূল ফটকের সম্মুখে কয়েজন নারী ও যুবক ‘ভুক্তভোগী পরিবার ও সুশীল সমাজের’ ব্যানারে মানববন্ধন করেন। সূত্র নিশ্চিত করেছে এসকল কর্মকান্ডের পিছনে কলকাঠি নেড়েছেন বন বিভাগের ঠিকাদার মোঃ মিলন। বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে ঠিকাদার মাহফুজুর রহমান মিলন গত বছর কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে তার ঘনিষ্ঠ ৬ ব্যাক্তিকে নিয়োগ প্রদান করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আউটসোর্সিং কর্মচারীদের চাকরীর নীতিমালা পরিবর্তনের কারনে আউটসোর্সিং-এ নিয়োগ পাওয়া ঐ ৬ ব্যক্তিরা সম্প্রতি বাদ পড়ে। একই সাথে ঐ কোটায় কর্মচারী নিয়োগের জন্য (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটওয়ারী টেন্ডার আহবান করেন। কিন্তু ঠিকাদার মিলন টেন্ডারে অংশ না নিয়ে তার পছন্দের ঐ ৬ ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটওয়ারীকে অব্যাহত চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। অপরআরেকটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন, সুফল প্রকল্পের আওতায় কাশিপুর বন সংরক্ষক কম্পাউন্ডে সাড়ে ৩কোটি টাকা ব্যায়ে ভবন নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অপপ্রচারে কোমর বেধে মাঠে নেমেছেন। এছাড়া কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ে দিন দুপুরে কয়েকজন স্টাফের সহযোগীতায় মাদকের আসর বসে আসছিল।
সেই মাদকের আসর উচ্ছেদ সহ বন বিভাগের কয়েজন স্টাফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করায় (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটওয়ারীর উপর সংক্ষুব্ধ হয়ে তারাও পর্দার আড়ালে থেকে মিথ্যা তথ্যে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া বন বিভাগে (ডিএফও) পদ শূন্য রাখতে পারলে কতিপয় ফরেস্টার মিলেমিশে সরকারী বরাদ্দকৃত অর্থ পুরোটাই লুটপাট করতে পারেন। কিন্তু (ডিএফও) থাকলে সরকারী বরাদ্দকৃত অর্থ লুটপাট করতে পারে না ফরেস্টাররা। যে কারনে (ডিএফও)দের বিরুদ্ধে সব সময়ই দুর্নীতিবাজ ফরেস্টার চক্রটি সড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে ব্যস্ত থাকেন। বরিশাল বন বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটওয়ারী দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বনজ সম্পদ রক্ষা, দখলদারদের উচ্ছেদ এবং দুর্নীতিবাজ চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। (সংবাদ সূত্র: দৈনিক সত্য সংবাদ- ১৪/০৯/২৫) এ কারণেই অসন্তুষ্ট মহল তাঁকে হেয় করতে বিভ্রান্তিকর প্রচারণার আশ্রয় নিয়েছে।
ডিএফও কবির হোসেনের আইনজীবী এনায়েত হোসেন বাচ্চু বলেন, “আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর কোনো আইনি বা যৌক্তিক ভিত্তি নেই। এটি পরিকল্পিতভাবে তাঁর সুনাম ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা।” ভুক্তভোগী ডিএফও মো. কবির হোসেন পাটওয়ারী বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি দীর্ঘদিন সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। বন বিভাগের উন্নয়ন ও স্বচ্ছতা রক্ষায় কাজ করার কারণে একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।” “সংবাদে বলা হয়েছে আমি নাকি বহুবার বিয়ে করেছি। অথচ এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ, কোনো তথ্য বা সংশ্লিষ্ট কারও নাম পরিচয়ই উপস্থাপন করা হয়নি।
এটি শুধুই আমার সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা।” “আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বনজ সম্পদ রক্ষা, অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং বন বিভাগের স্বার্থ রক্ষায় কঠোর অবস্থান নিয়েছি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে দুর্নীতিবাজ একটি মহল আমাকে হেয় করার জন্য বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।” “আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা একাধিক অভিযোগ ইতোমধ্যে মহামান্য হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন। তারপরও আমাকে হয়রানির জন্য বারবার মিথ্যা অভিযোগ ও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।