নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশাল সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন ভেদুরিয়া গ্রামে জমি দখলে ব্যর্থ হয়ে মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ইলিয়াস কবির ( বাচ্চু) নামের এক ব্যক্তি একাধিক মামলা করেছেন।
ভুক্তভোগী মোঃ শাকিল খান বলেন, ইলিয়াস কবির(বাচ্চু) গংদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ১৫ বছর পর্যন্ত ভেদুরিয়া গ্রামের জমির মায়া ছেড়ে জীবনের মায়ার জন্য বাকেরগঞ্জ থাকতে বাধ্য হই। গ্রামে পৈত্রিক সূত্রে কিছু জমি থাকায় বিভিন্ন সময়ে সেই জমি দখলের পাঁয়তারা করেন তারা। বাধাঁ দিলে বা আইনের আশ্রয় নিলে খুন জখম করার হুমকি দেন। গ্রামের জমি দেখতে গেলে কয়েক দফায় আক্রমণের চেষ্টাও করেছেন তারা। জমি দখলে নিতে হলে তাদের চাহিদা মোতাবেক চাঁদা পরিশোধ করে আসতে হবে বলে হুমকি দেয়ি আসছে তারা।
ভুক্তভোগী শাকিল খান আরও বলেন, সকল বাধা ও প্রাণের ভয় অতিক্রম করে ২০২১ সালে আমার পৈত্রিক জমি ভরাট করতে গেলে ইলিয়াস পূর্বের ন্যায় জমি ভরাট কাজের বাধা দেয়। আমি বন্দর থানায় সাধারন ডায়রি করি। বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এম পি কেস নং ৬/২১ বন্দর ফৌজদারী কার্যবিধীর ১৪৪/১৪৫ ধারায় দ্বিতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা আনায়ন করেন। উক্ত মামলা নিরশনের জন্য উভয় পক্ষদ্বয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগনরে মাধ্যেমে সালিশ মনোনয়ন করেন। এবং সালিশগন কতৃর্ক দেয়া সিদ্ধান্ত/রায় সমূহ যথাযথভাবে মেনে নিবেন মর্মে অচলনামা কম্পিউটার কম্পোজ করে ,পড়াইয়া/পরিয়া মর্ম বুঝিয়া স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে কারো বিনা অনুরোধে নিজ নিজ নামে (১৯ জানুয়ারী)২০২১ তারিখ সহি/স্বাক্ষর করেন। চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন পরিষদে অচলনামার মাধ্যেমে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে শালিসী হয়। উক্ত আদালতে শালিসগণ ছিলেন, সাবেক ততকালীন চেয়ারম্যান এ কে এম আঃ আজিজ হাং, মোঃ বাছির আহম্মেদ বাচ্চু, বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজুল হক, সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি এস এম মতিউর রহামন, মোঃ হুমায়ন কবির বাচ্চু, মোঃ লাল হাওলাদার, মোঃ ওবাইদুল করিম তুহিন পন্ডিত, কালাদাস। শালিসীতে ১ম পক্ষ ছিলেন, মোঃ শাকিল খান, আঃ রব সন্যমত, অরুন ঢালী, দ্বিতীয় পক্ষ ইলিয়াস কবির( বাচ্চু), আবদুর রব সন্যমত। ১ম পক্ষ শাকিল খান সালিশ বৈঠকে মৌখিক বক্তব্যে জানান, ১৪০ জে,এল বি.এস খতিয়ান ৬২৭ এর দাগ নং ৪৩১,৪৪২,৪৮২,৪৮৮,৪৯০,৫০৮,৫০১,৫১২ সহ ৮টি দাগে ২একর ৬শতাংশ সম্পত্তি খান পরিবারের এ্যাড. মোঃ আব্দুস সালাম খান এর সকল অংশিদার গণের সাব কবালা দলিল আছে। প্রথম পক্ষ মোঃ শাকিল খান, মোঃ আব্দুর রব সান্টু, মোঃ অরুন ঢালী দুই বছর পূর্বে বায়না চুক্তিপত্রে আবধ্য হন।তদানুযায়ী প্রথম পক্ষ উক্ত সম্পত্তির মধ্যে থাকা নালা ডোবা বালু দিয়ে ভরাট করে সম্পত্তি শ্রেণী উন্নত করনে। কিন্তু বি এস ৬২৭ খতিয়ানের রেকর্ডিও মালিক আব্দুল রশিদ খান এবং আলতাব হোসেন খান এ্যাড. আব্দুস সালাম খান এর প্রথম পক্ষ সাথে সৃষ্ট সাব কবালার বায়না চুক্তিপত্র করেন। দ্বিতীয় পক্ষ মোঃ ইলিয়াস কবির বাচ্চু, মোসা: জেসমিন বেগম গংদেরএকই খতিয়ানের ৫১২,৪৮২,৪৮৮,৪৯০,৫১০ নং দাগের অংশ হিসেবে প্রাপ্যতা অনুযায়ী সাব কবালা দলিল মুলে পঁচিশ দশমিক পঞ্চাশ শতাংশ জমি সাব কবালা রেজিস্ট্রি নেন। বি.এস ৬২৬ নং খতিয়ানের ৫১২ নং দাগের সম্পত্তিতে উচু নিচু নালা ডোবা বেদখলীসহ বিভিন্ন শ্রেণীর সম্পত্তি রয়েছে। যাহার পরিমান সাতচল্লিশ শতাংশ। শালিস আলোচনা ইলিয়াস কবির বাচ্চু চার শতাংশ সম্পত্তি ওই দাগে ভোগ দখল করবেন বলে অচলনামায় স্বাক্ষর দিয়ে থাকেন। কিন্তু সম্পত্তির লোভ সামলাতে না পেরে বরিশাল বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এর আদালতে ১ম পক্ষ মোঃ অরুন ঢালী গংদের নামে একাধিক ভুয়া মামলা করেছেন ইলিয়াস কবির (বাচ্চু)। প্রতিটি মামলা তদন্ত পরে আদলতের রায় পায় বিবাদীগণ।
ভুক্তভোগী মোঃ অরুন ঢালা বলেন, ইলিয়াস কবির বাচ্চু তো দেশেই থাকে না আমি তাকে ভালো করে চিনিও না সে কেনও বারবার আমার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেন বুজতেছি না।
ভুক্তভোগী আব্দুর রউফ সেন্টু বলেন, যে জমি নিয়ে ঝামেলা চলছে সেখানে তো আমাদের মাত্র পাঁচ শতাংশ জমি আছে। মেইন মালিক শাকিল খান আবদার করেছে আমরা ছেড়ে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ইলিয়াস কবির বাচ্চু তো মামলা বাজ। সে নিজেই ইউনিয়ন পরিষদে শালিসী মানছে, সেখানে অচলনামা হয়েছে। ইলিয়াস কবির পাঁচ দাগে জমি কিনেছে, সে ভোগদখল করতে চায় এক দাগে। মেইন জমির মালিক বাধা দিয়েছে, তাতে আমাদের নামে প্রায় ৮টি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। সকল মামলার রায় আমাদের পক্ষে আসছে। ও প্রায় এক বছর ধরে বলিতেছে, আমাকে পাঁচ লাখ টাকা দেন আমি অন্যান্য দাগে চলে যাবো। ইউনিয়নের সবাই ওরে মামলাবাজ ইলিয়াস কবির বাচ্চু নামে চিনে।
বর্তমান চেয়ারম্যান অচলনামার মাধ্যেমে শালিসীর শালিসদার মোঃ সিরাজুল হক বলেন, ইলিয়স কবির বাচ্চু পাঁচদাগে জমি কিনেছে সে একদাগ দিয়ে ভোগদখল করতে চায়। সে যেই জমি দখল করতে চায়, সেখানে মাত্র দু শতাংশ সত্তর পয়েন্ট জমি পাবে। আমরা শালিসীর মাধ্যেমে তাকে চার শতাংশ জমি দিয়েছে, সে শালিসী মেনে জমি বুঝিয়ে নিয়েছে। এখন বারবার মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষদের হয়রানি করছে।
আদম আলী সিকদার বলেন, আমি চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন ভেদুরিয়া বসবাস করায় বিভিন্ন সময় আমাকে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করেন। গত ২০২০ সাল থেকে ২০২৫ জুন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দোসর ইলিয়াস কবির বাচ্চু, শেখ রাসেল পাঠাগার ক্লাবের সদস্য আমিরুল ইসলাম সোহেল, কামাল হোসেন কবির হাওলাদার, নান্টু হাওলাদার, বজলুর রহমান মিলে আমাদের পাওয়ার নেওয়া জমি দখল করার চেষ্টা করেন। এবং একাধিক মামলা করে আওয়ামী লীগের দোসরা।
সকল মামলা আমাদের পক্ষে রায় দেয়। তাতেও ক্ষান্ত হয়নি চাঁদাবাজ ও মামলাবজরা। অভিযুক্ত ইলিয়াস কবির বাচ্চুর সেলফোনে আদালতে দ্রুত বিচার আইনে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে এ বিষয়ে মোবাইলে কথা বলতে পারবোনা। আপনি আগামী কাল দেখা করে কথা বলেন বলে সংযোগ বিছিন্ন করে দেন।